
হেগ: দি হেগে আন্তর্জাতিকপরিসরে আয়োজিত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিকমাতৃভাষা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাতৃভাষার টানেসকল জাতি-বর্ণের মানুষ মিলেমিশে হল একাকার, সমস্বরেগাইল মাতৃভাষার জয়গান। শীতের সকালে প্রতিকূলআবহাওয়ায়ও তিনশত জনের ধারণক্ষমতার হলে তিলধারনের ঠাঁই ছিলনা। শান্তি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের বার্তা নিয়েমাতৃভাষা দিবস যেন বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে সুদূর দিহেগে এসে পেল সার্বজনীনতা।
শহীদমিনারে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে ভাষা শহীদদেরস্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান নেদারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশেররাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল এবং ভারত, মালয়শিয়া, শ্রীলংকাও থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত এবং অন্যান্য দূতাবাসের প্রতিনিধিবৃন্দ। নেদারল্যান্ড আওয়ামীলীগ ও প্রবাসী বাংলাদেশী সংগঠনসীমানে পেরিয়ে, সোনার বাংলা ও প্রবাসী বাংলাদেশী ও স্থানীয়জনগণও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় ভাষা শহীদদের। নেদারল্যান্ডের প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে বরাবরের মতোইছিল ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। তাদের সুবিধার্থেই তাইসাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই আয়োজন। প্রবাসী বাংলাদেশীছাড়াও অনুষ্ঠানে যোগ দেন স্থানীয় ছাত্র-ছাত্রী, পেশাজীবি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানের প্রথমভাগে ভাষা শহীদের স্মরণে এক মিনিটনিরবতা পালন করা হয়। এর পর আলোচনা পর্বে অংশ নেননেদারল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল, দিহেগের ডেপুটি মেয়র ও রাষ্ট্রদূতবর্গ। রাষ্ট্রদূত বেলাল তাঁর বক্তব্যেজানান যে শান্তি ও ন্যায়বিচারের শহর হিসেবে পরিচিত দি হেগেএকটি স্থায়ী শহীদমিনার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন সত্য হতে চলেছে। স্থায়ীশহীদমিনার নির্মাণের উপযুক্ত স্থান বরাদ্দের জন্য দূতাবাসেরআবেনদনটি দি হেগের নগর কর্তৃপক্ষের সক্রিয় বিবেচনাধীনরয়েছে বলে তিনি জানান। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েজাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে জাতি কিভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে রাষ্ট্রদূত বেলাল তার বর্ণনা দেন। রাষ্ট্রদূত বেলাল বাংলাদেশে চলমান ব্যাপক উন্নয়নকর্মকান্ডের বর্ণনা দেন এবং বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তায়বাংলাদেশের অবদান অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দি হেগের ডেপুটি মেয়র রাবিন বালদেবসিং আন্তর্জাতিকমাতৃভাষাকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। মেয়র বালদেবসিং জানান যেআন্তর্জাতিক মাতৃভাষার দর্শন আর শান্তি ও ন্যায়বিচারেরশহর দি হেগের নীতি ও ভিত্তি এক ও অভিন্ন। একারণেদূতাবাসের দি হেগে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ প্রস্তাবের সাথেনগর কর্তৃপক্ষ নীতিগতভাবে একমত বলে তিনি ঘোষনা দেন।ভারতের রাষ্ট্রদূতও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষাকে বিশ্ব বাস্তবতায়পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথাস্মরণ করেন।
