
নিউইয়র্ক থেকে : ‘সততা এবং নিষ্টার সাথে কাজ করলে আমেরিকার স্বপ্ন হাতের মুঠোয় আসবেই। অভিবাসীর মধ্যে এই মার্কিন মুল্লুকে আজ যারা বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক, তাদের সকলেই কঠোর শ্রম দিয়েছেন নিজ নিজ ব্যবসা-বাণিজ্যে’-এমন অভিমত পোষণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা নির্মাণ-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম ‘টুলি কন্সট্রাকশন’র প্রজেক্ট ম্যানেজার ডিন ডিভো ইস্কোয়ার।
১৯ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির সন্নিকটে লং আইল্যান্ড এলাকায় সানরাইজ হাউওয়ের ওপর ‘আরএলবি সেইফটি, হার্ডওয়্যার, পেইন্ট’ নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিন ডিভো আরো বলেন, ‘প্রথম প্রজন্মের বাংলাদেশী ইমিগ্র্যান্ট আকতার হোসেন বাদল নিউইয়র্ক অঞ্চলে নির্মাণ ব্যবসায়ী হিসেবে ইতিমধ্যেই সুনাম অর্জন করেছেন। পাশাপাশি আরএলবি জেনারেল কন্সট্রাকশন, আরএলবি আয়রন এবং হার্ডওয়্যার ব্যবসাতেও প্রসার ঘটিয়েছেন। এভাবেই বাংলাদেশী-আমেরিকানরা নিজেদের ভাগ্য গড়ার মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে এই আমেরিকার উন্নয়নেও অপরিসীম ভ’মিকা রাখছেন।’
বিপুলসংখ্যক নির্মাণ ব্যবসায়ীর করতালির মধ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের আগে ডিন ডিভো ফিতা কেটে বিপুল অর্থ বিনিয়োগের এই প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রদত্ত ধন্যবাদ বক্তব্যে চাঁদপুরের সন্তান আকতার হোসেন বাদল বলেন, ‘স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেও ভালো চাকরি পাইনি। কারণ, নব্বইয়ের দশকে এই আমেরিকায় আমার কোন রেফারেন্স ছিল না। অবশেষে নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে একটি জুতার দোকানে সেল্সম্যানের চাকরি নেই। সেখান থেকেই নির্মাণ ব্যবসা করার সংকল্প গ্রহণ করি। সেখানেই কানেকশনের প্রয়োজন। তবে তা পূরণে এগিয়ে এসেছিলেন একজন ক্রেতা, যিনি আমেরিকান ও অঙ্গরাজ্য পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন।’
বাদল উল্লেখ করেন, ‘দীর্ঘ ২৫ বছর পর আজ আমি আমেরিকান স্বপ্নের কাছাকাছি আসতে সক্ষম হয়েছি বলে মনে করছি। বহুজাতিক এই সমাজে নির্মাণ-ঠিকাদারি এবং নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত সবধরনের সামগ্রির সাপ্লাইয়ার হওয়ার মধ্যেও বিশেষ এক তৃপ্তি রয়েছে।’
চীন, ডমিনিকান রিপাবলিকসহ সেন্ট্রাল আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সাথে বাদলের রয়েছে কন্সট্রাকশন ব্যবসা। সে সুবাদে মার্কিন রাজনীতিকদের সাথেও গড়ে উঠেছে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এই সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের কল্যাণেও কাজে আগ্রহী ডেমক্র্যাটিক পার্টির বলিষ্ঠ সমর্থক আকতার হোসেন বাদল।
একমাত্র সন্তান রুদসী পড়ছে আইন শাস্ত্র নিয়ে। রুদসী এটর্নী হয়েও রাজনীতিতে জড়িত হতে চান বলে জানান বাদল।
গত এক দশকে নিজ এলাকা এবং প্রবাসে অসংখ্য সেবামূলক কাজে কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করেছেন এই বাদল। সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মকান্ডেও সরব রয়েছেন দুই দশকের অধিক সময় যাবত।
আরএলবি সেইফটি, হার্ডওয়্যার, পেইন্টের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাসাউ কাউন্টির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন। সকলেই প্রবাসী বাংলাদেশীদের কর্মনিষ্ঠার প্রশংসা করেন এবং বাদলের নির্মাণ-ঠিকাদারিতে সর্বাত্মক সহায়তা অব্যাহত রাখবেন বলেও উল্লেখ করেন। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটিতে ৩ শতাধিক বাংলাদেশী রয়েছেন, যারা নির্মাণ ব্যবসায় জড়িত। তবে লং আইল্যান্ড এলাকায় বাদলের উদ্যোগেই প্রথম একটি সেইফটি, হার্ডওয়্যার স্টোর হলো।
